মাথা আর দেহ




 মাথা আর দেহ বা ধড়, দুইয়ের মধ্যে হঠাৎ বচসা বেধে গেল। দুজনেই নিজের নিজের তর্কের পক্ষে যুক্তি আনে, বিধান এর উক্তি দেয়। কেউ বুঝতে পারে না, যারা সর্বদা একসাথে, সর্বদা অবিচ্ছিন্ন।  । তাদের হঠাৎ এ রকম বিষাদ কেনো? হঠাৎ পরস্পরের প্রতি বিষোদগার কেনো? 

তা নাহয় ব্যাপার টা বলি আপনাদের। 

সেদিন মাথা আমার অনেক ঘুরছে, আর দেহ তো নিজের কাজে সাজে ব্যাস্ত। মাথার ঘোরা এতো বেশি, দেহ বিরক্ত হয়ে গেলো, আর তার থেকেই দুজনের সমস্যা বাড়লো।

"সারাটা সময় আমার ওপরে চেপে বসে থাকিস, না কাজের, না কম্মের, দেখছিস আমি ব্যাস্ত আছি, আর তুই শুধু ঘুরে যাচ্ছিস। আমাকেও স্থির থাকতে দিচ্ছিস না।"

"আমি কি শখ করে ঘুরছি? তুই তো আমার খেয়াল রাখিস না, পেটে এত হাওয়া জড়ো করেছিস যে আমাকে পর্যন্ত উড়িয়ে নিয়ে যাবে।"

"আমার পেট, আমি হাওয়া জড়ো করি আর খাবার, তোর তাতে কী রে? নিজে পাচ্ছিস না বলে আমাকে বিরক্ত করছিস."

"আমি পাচ্ছিনা? আরে পাগলা,  আমি না থাকলে হাওয়া কোথা দিয়ে পেতিস আর খাবারই বা কোথা থেকে পেতিস? আমার মুখ, আমার নাক, সব ব্যাবহার করে খাবার খাচ্ছিস, শ্বাস নিচ্ছিস আর আমি পাইনা? আরে তুই সবই লুটে নিচ্ছিস, তাও তোর শান্তি নেই। আর আমাকেই গাল পাড়ছিস।"

"দেখ, মুখ আর নাক টা তোর কাছে আছে, তার বড়ো অহংকার না? আরে, তোর নাক মুখ কি, আমি যদি তোকে রক্ত আর অক্সিজেন না দীই তাহলে তো তুই সেকেন্ড এর ভেতরে শেষ হয়ে যাবি। তোর ভেতরের ঘিলু কাজই করবে না।"

"বোকা পাঁঠা, আমার ঘিলু যদি তোর হৃৎপিণ্ড টা কে নির্দেশ না দেয় তাহলে তো তুই শেষ। আমি আছি বলেই তো তুই আছিস। জানিস, যদি আমি আগে মারা যায় তাহলে তোর টুকরো গুলো অন্য মানুষের দেহে পাচার করে দেওয়া হয়ে, ।"

তার পর তো শুধু তক্কো না, মারা মারি লেগে গেলো। দেহ বলে তুই ছাড় আমাকে, মাথা বলে তুই ছাড় আমাকে। হঠাৎ দেখি আমার মাথা টি দেহ থেকে ছিন্ন হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়লো। আর দেহ, তার চক্ষু চলে যাওয়াতে সে কন্ধকাটা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর দু হাতে তালি বাজিয়ে রাস্তা চেনার চেষ্টা করছে।

আমারই দেহের হাতের ঝাপটা আমার গায়ে পড়লো, আর ঠিক সেই সময় ঘুম টা ভেঙে গেলো।

অনুপ মুখার্জি " সাগর"

2 comments:

  1. Excellent filling & though
    Thank you for beautiful gifts.

    ReplyDelete
  2. Thank God it was a dream 😀 Beautiful expression

    ReplyDelete

Know Thyself. Only You know yourself through you internal Potency