আইজ্ঞা, আমি ফুল এর কথা কইতাসি। আবার ইংরাজি ফুল এর কথা ভাইব্বা নেন তো তাতে আপনাগো দোষ দিবার কিসসু নাই গো কর্তা। মানে আমি তো কর্তা এই বাংলার ফুলের ই কথা কইবো মনস্থ করসি যা আমাগো ইংরাজীর ফুল বানাইতে এক পয়সাও কমী সারে নাই গো।
তা বেশি ভান্তারা না কইরা সোজা সুজি গপ্পো তে আসি, তাই না গো। জন্ম থাইক্কা জানতাম গেন্দা, জবা আর আকন্দ ফুল ছাইড়া বাকি সব ফুল, এই যেমন ধরুন গিয়া গোলাপ, জুঁই, রজনীগন্ধা, চম্পা, চামেলী এইগুলানের নিজের নিজের গন্ধ থাকে। ঠিক যেমন ডা আর কি মোরা অনেকেই সারমেয় পোষণ করি তবে রাস্তার সারমেয় কুত্তা আর বাড়ির সারমেয় " ডগি "।
আরে ভাইয়া, এই চার কুড়ি বৎসর বয়স হইয়া পাঁচ কুড়ির তরফে ধাওয়া করতাসি গো কর্তা তাই যা কইতে যাই আর যা কই তার মাঝে জিভ টা ফিসলাইয়া গিয়া দুই আলাদা হইয়া যায় গো। এই যেমন কই মাছ ফসলাইয়া যায় ঠিক সেরকম ফস্কাইয়া যায় আর কি, তা দাদা রা নিজ গুনে ক্ষমা ঘেন্না করে দিবেন জানি।
ওই যা কইতা সিলাম কর্তা মশাই দের, বাপের জন্মে শুনি নাই যে গোলাপ ফুলে চামেলীর গন্ধ, আর সেই কথা টাই কর্তা কইসি।
সে অনেক বৎসর আগের ঘটনা গো। একটা আপিস এর গভীর চেকিং করার লাইগ্যা মুর্শিদাবাদ থিকা আমি গেলাম গিয়া বড় শহর দিল্লী। উড়ো জাহাজ থাইক্যা দিল্লী তে নাইম্যা বাইরে যাইয়া দেখি আমাগো নামের তক্তা বানাইয়া মুনিশ ক'জন দাড়াইয়া আছে। আমাগো পরিচয় পাওয়া সাথেই দুই খান ফুলের মালা আমাগো গলায় ঝুলাইয়া দিল। মনে হইলো প্রায় আমাগো গলাতেই কে যেনো ঝুলিয়া পড়িল। তার সাথের এক মুনিশ হাতে ইয়া বিশাল একখান ফুলের তোড়া ধরাইয়া এক ঝাঁক ফটো তুইল্যা তোড়া টা কাইড়া লইলো । আমাগো নিজেকে বেশ মন্ত্রী মন্ত্রী মনে হচ্ছিল যে কর্তা।
তা তার পরেই দুই তিন খান গাড়ি কইরা সটান হোটেল দিকে রওনা দিলাম সবে। সন্ধ্যা গড়াইয়া রাত এর দিকে সময় দৌড় দিয়া ছিল। তা সেই সব মুনিশ জন মোকে হোটেল ঘরে থুইয়া দিয়া নিচে খাবার ঘরে যাইলেন। কইয়া গেলেন মোর সাথে সেখানে দেখা হইবো। সন্দেহ হইলো, খাবার খাইবার লগে এ মোরে দাকটাসে না কি মোরে খাইবার জোগাড় করতেসে।
খাবার সায়রা জেইখন ঘরে আইলাম, দ্যেখলাম যে ফুলের তোড়া খানি একটি ফুলদানি তে থান পাইয়াসে। তার কাসে গিয়া কর্তা মোর ভিরমি খাইবার জোগাড় হইল যে।
আইজ্ঞা, সেই কথা তাই তো কইতাসি, এক তোড়া গোলাপ ফুল আর তার লইগা চামেলীর গন্ধ আইতাসে।
তা নিজের মাথা টা কে চাইপা ধইরা ঘুরতে মানা কইরা দিলাম। কইলাম, যারা এই ফুল দিয়াসে তাদের উচ্চারিত শব্দ আর তাদের গলায় আটকে থাকা কথা গুলি যেরকম আলাদা ঠিক সেই রকম এই সব ফুল দ্যেখতা এক আর গন্ধে আর এক।
ঠিক সেই রকম কর্তা, যেমন পোলা মাইয়ার লগে মেয়ে বা ছেলে দেখতে গিয়া তার বাড়ি আর চামড়ার রং দেইখা পুত্র বধূ বা জামাই বাবাজীবন কে ঘরে তুইল্যা আনলা। এইটা তো দ্যেখলা না গো যে তাদের মাথার ভিতর কিছু ভালো ঘিলু আইসা না কি ওপর তলায় ভালো জিনিসের ভীষণ আকাল।
কইতে পারেন কর্তা এই সব কেমনে হয় ।
Nice 👏👍
ReplyDelete