প্রকৃতি দর্শন

 




ত্রিপুরা সুন্দরির বর্ণনা পড়ে মনে পড়ে গেল, এই তো এপ্রিল ২০২৪ এ কাজের সুত্রে এক অজানা, নাম না জানা জায়গা, জাম্মু শহর থেকে ১০০ কিলো মিটার দূরে যেতে হয়েছিল। প্রথমে কিছু মানুষের চিন্তা প্রকাশ পেল, নির্বাচনের সময়, সাবধান, কিছু গণ্ডগোল না হয়ে।

আমি আবার একটু বেপরোয়া, মানে ছোট বয়েসে সব কিছু তে সুধু ভয় ভয় থেকে, এখন জীবনের চার ভাগের শেষ ভাগ টা তে এসে এই বেপরোয়া ভাব টা আয়ত্ত করতে পেরে আনন্দেই আছি।

সে যাক, রামনগর নামের ছোট্ট শহর থেকে ১০ কিমি দূরে পাহাড়ের গায়ে যখন একটি মান্দিরের আশ্রমে থাকার কথা শুনলাম, মনের ভেতর কিছু আশঙ্কা আসেনি বললে মিছে কথা বলা হবে। নিজেই গাড়ি চালিয়ে চলে গেলাম . রাত টা মাঝ রাস্তায় একটা হোটেল এ থেকে পরের দিন দুপুর বেলা রামনগর . অফিস এ সাড়ে ছটা পর্যন্ত কাজ করে সেখানের একজন কে নিয়ে গেলাম থাকার জায়গায়.  রাস্তা টা ভালই, মানে পাহাড়ি রাস্তা, কোথাও ভাঙা, কোথাও সামনে থেকে গাড়ি এলে একজন কে দাঁড়াতে হবে, আবার কোথাও পাশাপাশি দুটো গাড়ি আরামে বেরিয়ে যাবে.  জায়গায় পৌঁছে বুঝলাম, জীবনের একটি বিরল অবসর পেয়েছি.  

গেট দিয়ে ঢুকেই বাঁ হাতে উচ্চ শিবের মূর্তি. সোজা দেখলাম সবুজ আর ফুলের বাহার এর ভেতর দিয়ে 50 মিটার হেঁটে গেলে মন্দির, নানা ঠাকুরের অবস্থান.

শিব ঠাকুরের মূর্তির নিচেই খানিকটা জায়গা ঘিরে  প্রেম গ্রাম, শ্রী কৃষ্ণের নন্দ গ্রাম এর কিছু দৃশ্য বানানো.  মন্দির এর দুই পাশে কিছু থাকার ঘর.  কোনো জিনিস কম নেই.  শুধু রাতের খাবারের জন্য বলে দিলো, সাড়ে আটটার ভেতর সেরে ফেলতে হবে.

খাবারের জায়গা থেকে রাতের আহার সেরে যখন বেরিয়ে ঘর যাব, সবদিক নিশ্চুপ, নিস্তব্ধ . শুধু রাতের পোকা আর মাঝে মাঝে পাখি, এ ছাড়া কোনো শব্দ নেই. 

দুদিন, 750 কিলোমিটার গাড়ি চালানো আর 6 ঘন্টা অফিসের ক্লান্তি মিনিট দশ মিনিট এ মনে হলো উধাও . নিস্তব্ধ আঁধার এ কিছু গান এসে গেলো মাথায়, হেমন্তের গাওয়া বস এক চুপ সি লাগি হায় ...

আবার একা বসে মনে পড়ে গেলো উত্তম কুমারের মুখে রাতের আঁধারে হোটেল শাহজাহান এর ছাতে, বড় একা লাগে এই আঁধারে.

কিন্তু আমি তো একা ছিলাম না, এত অসাধারণ শান্তি ময় প্রকৃতির সঙ্গ তে একা? না, কোনো মতেই না. 

ওখানে কাটানো এক সপ্তাহ আমার শরীর বেশ তাজা করেছিলো. 


অনুপ মুখার্জি "sagar"


2 comments:

  1. প্রকৃতি সব ক্লান্ত ভুলিয়ে দেয়

    ReplyDelete
  2. পড়ে যেন নিজেই ঘুরে এলাম। খুব সুন্দর

    ReplyDelete

Know Thyself. Only You know yourself through you internal Potency