সুগন্ধি, বা পারফিউম।
সাধারণত সুগন্ধি ব্যবহার করি না। এ না যে কখনও করিনি। করেছি, তবে খুব কম। আসলে একটুও তীব্র গন্ধ হলে হাঁচি শুরু হয়ে যায় তাই আর কি মোটা মুটি দূরে থাকার চেষ্টা করি। এ ছাড়া খুব যেনো কৃত্রিম মনে হয় পারফিউম লাগানোর ব্যাপারটা। তার পর আবার ছেলে দের আর মেয়েদের আলাদা, জামার আর গায়ের আলাদা, বগলের আর বুকের আলাদা, এই সব ঝামেলা মনে হয়ে।
এই সবের মাঝে, আমি সুগন্ধি না নিলেও মানুষে ত নেবেই, আর কখন ভালো লাগে, কখন আবার লাগে না।
কিছু দিন আগেই ভাগের অটো তে চেপেছিল, দুটি মেয়ে এত তীব্র সুগন্ধি লাগিয়েছিল যে প্রথমে আমার নাক চুলকালো, তারপর গলা, বাড়ি পৌঁছুবার আগে সর্দি শুরু, দু দিন জ্বর এর লাং খেয়ে পড়ে রইলাম।
আবার গত কাল এক বাস এ কেউ এত মধুর হালকা সুগন্ধি লাগিয়েছিল যে মনে হলো আমি মাতোয়ারা হয়ে যাবো। দুঃখের বিষয় এটা যে কে লাগিয়েছিল, সেটা বুঝতে পারলাম। আবার এই তো সেদিন, বাস এ ভিড়ে চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে আছি, চতুর্দিকে এত ঘামের গন্ধ, অন্নপ্রাশন এর অন্ন উঠে যেনো উঠে আসবে।
সেদিন একজন ডালিয়া ফুলের গুচ্ছ উপহার দিয়ে গেলো, দেখি তার থেকে রজনীগন্ধার গন্ধ বেরুচ্ছে। অবাক হতে এক জন জানালো, স্প্রে মেরেছে।
কিছু মানুষের আবার মনের দুর্গন্ধ অনেক। দাদু আর নাতনি খেলছে, পাস থেকে একজন দুর্গন্ধ ছড়িয়ে চলে গেলো, বুড়ো নাতনি নাতনি করে স্বাদ মেটাচ্ছে!! এ দুর্গন্ধ তো পারফিউম এ ঢাকা যায় না।
আবার কারো সুগন্ধ এরকম যা সে চলে গেলেও থাকে। অফিস এর বস সবাইকে হাত ধরে কাজ শিখিয়ে চলে গেলো, সেই গুরুর স্নেহ ভাজন শিক্ষার্থী রা কোনো দিন ভুলতে পারে না, সে এক ঐশ্বরিক সুগন্ধ।
সুন্দর সম্পর্কের সুগন্ধ মনের গভীর থেকে বেরিয়ে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পরে, কোনো ব্র্যান্ড পারফিউম এর দরকার পড়ে না।
অনুপ মুখার্জী "সাগর"
Comments
Post a Comment