আমি যে দেখেছি তারে যাকে দেখা যায়না -২
১৯৯৪ অক্টোবর এর এক রাত, দিল্লি শহর, রাত সাড়ে এগারোটা, না ঠান্ডা, না গরম। ফুটপাথে একটি ল্যাম্পপোস্ট এ পিঠ ঠেসান দিয়েই বসলাম, একটা বিশ্রাম, একটা পিঠ ঠেকানোর ব্যবস্থা । তখন মাথায় আসেনি ল্যাম্পপোস্ট টি দিনের বেলা কোনো কুকুর কি নিজের রাজত্ব চিহ্নিত করে গেছে কি না। অত চিন্তা করার শক্তি তখন শরীর বা মনে নেই। ক্লান্ত অবসাদ তখন আমার মন, আমার শরীর, আমার সর্বস্য গ্রাস করে রেখেছে। দিল্লির একটি বড়ো হাসপাতালের সামনে অল্প ক'মিনিট এর বিশ্রাম চুরি করে নেয়া, কারো অপেক্ষা না, কোথাও যাওয়া না।
মা হাসপাতালে ভর্তি। আগের রাতে আমি ছিল মার সাথে, সকালে বেরিয়ে সোজা অফিস করে ফেরত হাসপাতাল ছটার সময় যে খানিক বসে বাড়ি যাবো। রাতে দিদির থাকার কথা। দিদিও অফিস করে সাত টার ভেতর এসে গিসলো। বাণিজ্যের দুনিয়া বড়ই নিষ্ঠূর, পারিবারিক সম্পর্ক সে দুনিয়া তে জায়গা পায়না। রাতের খাবার একজন দিয়ে গেলো দিদির জন্য। হঠাৎ মনে হলো মার কিছু হচ্ছে, নার্স কে ডাকা হলো, তারপরেই ডাক্তার, বড়ো ডাক্তার, আমাকে বললো কিছু জরুরি ওষুধ আনতে। দোকান প্রায় ৭৫০ মিটার। ওষুধ আনলাম, তার পর আরেকবার, আরো, ঠিক কবার জানিনা। ১১:৩০ এ পরিস্থিতি সামাল হলো, র আমি বাইরে এলাম, কারণ রুগীর সাথে শুধু একজন থাকবে, আর দিদি ভেতরে, আমি বাইরে, ভয় আবার কিছু না হয়।
ফুটপাথ এ বসে খেয়াল হলো সারাদিন কিছু খাইনি, মনে হলো খুব ক্ষিদে পেয়েছে। সকাল বেলা হাসপাতাল ক্যান্টিন এ কিছু খেয়ে বেরিয়ে ছিলাম তারপর আর খাবার সুবিধে হয়নি। উঠলাম, ক্যান্টিন এর দিকে গেলাম, বন্ধ হয়ে গেছে। বাইরের দোকান গুলো একে একে দেখলাম, সব বন্ধ। শুধু একজন বাসুন ধুয়ে রাতের মতন সব গুছিয়ে রাখছে। তাকে জিজ্ঞেস করলাম কিছু আছে কি না, সে বললো সব শেষ। আমি বাইরে বেরুলাম। বাস বন্ধ হয়েগেছে, আমার পকেট অনুযায়ী কোনো খাবারের দোকান খোলা নেই। বাধ্য হয়ে ফিরে এসে সেই ল্যাম্পপোস্ট এ পিঠ ঠেকিয়ে বসলাম, কল থেকে কিছু টা জল খেয়ে। দেখি যে দোকান নিজের সব জিনিস গুছিয়ে রাখছিলো সে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। তার কাছে যেতে জিজ্ঞেস করলো কিছু খেয়েছি কি না। না বলা তে সে বললো যে তার ভাই এর জন্য রান্না করেছিল, বাস বন্ধ হয়েগেছে মানে সে আর রাতে আসতে পারবে না, তো আমি যদি শুধু রুটি আর ডাল খাই তো সে দিতে পারে। আমার জন্য তো সেটা অমৃত।
টাকা জিজ্ঞেস করতে সে মানা করলো যে এগুলো বিক্রির না, ভাইয়ের জন্য বানানো, সে এলোনা তো আমার ভাগ্যে লেখা। দু একবার আরো বললাম কিন্তু সে শুনলনা, রুটি ডাল আমার হাত এ ধরিয়ে নিজের বিছানায় চলে গেলো অন্ধকারে। খেলাম, তৃপ্তি করে, বোধহয় জীবনের একটি উত্তম রাতের খাবার সেদিন সেই ফুটপাথে খেয়েছি।
সকাল বেলা খবর পেলাম মা কে ছেড়ে দেবে, নিয়ে বাড়ি যাওয়া হলো আর তাতে প্রায় সারাদিন লেগে গেলো। এক সপ্তাহ পর গেলাম তো দোকান তা পেলাম না। শুনলাম পৌরসভা দোকান গুলো তুলে অন্য কোথাও বসিয়েছে। মনে হলো, সেদিন যে খাবার তা পেলাম, সেটা আমি তাকে হয়তো অনুভব করলাম যে আমাদের সবাইকার চোখের আড়ালে। আমি সেই অদৃশ্য কে দেখেছিলাম সেদিন।
মা হাসপাতালে ভর্তি। আগের রাতে আমি ছিল মার সাথে, সকালে বেরিয়ে সোজা অফিস করে ফেরত হাসপাতাল ছটার সময় যে খানিক বসে বাড়ি যাবো। রাতে দিদির থাকার কথা। দিদিও অফিস করে সাত টার ভেতর এসে গিসলো। বাণিজ্যের দুনিয়া বড়ই নিষ্ঠূর, পারিবারিক সম্পর্ক সে দুনিয়া তে জায়গা পায়না। রাতের খাবার একজন দিয়ে গেলো দিদির জন্য। হঠাৎ মনে হলো মার কিছু হচ্ছে, নার্স কে ডাকা হলো, তারপরেই ডাক্তার, বড়ো ডাক্তার, আমাকে বললো কিছু জরুরি ওষুধ আনতে। দোকান প্রায় ৭৫০ মিটার। ওষুধ আনলাম, তার পর আরেকবার, আরো, ঠিক কবার জানিনা। ১১:৩০ এ পরিস্থিতি সামাল হলো, র আমি বাইরে এলাম, কারণ রুগীর সাথে শুধু একজন থাকবে, আর দিদি ভেতরে, আমি বাইরে, ভয় আবার কিছু না হয়।
ফুটপাথ এ বসে খেয়াল হলো সারাদিন কিছু খাইনি, মনে হলো খুব ক্ষিদে পেয়েছে। সকাল বেলা হাসপাতাল ক্যান্টিন এ কিছু খেয়ে বেরিয়ে ছিলাম তারপর আর খাবার সুবিধে হয়নি। উঠলাম, ক্যান্টিন এর দিকে গেলাম, বন্ধ হয়ে গেছে। বাইরের দোকান গুলো একে একে দেখলাম, সব বন্ধ। শুধু একজন বাসুন ধুয়ে রাতের মতন সব গুছিয়ে রাখছে। তাকে জিজ্ঞেস করলাম কিছু আছে কি না, সে বললো সব শেষ। আমি বাইরে বেরুলাম। বাস বন্ধ হয়েগেছে, আমার পকেট অনুযায়ী কোনো খাবারের দোকান খোলা নেই। বাধ্য হয়ে ফিরে এসে সেই ল্যাম্পপোস্ট এ পিঠ ঠেকিয়ে বসলাম, কল থেকে কিছু টা জল খেয়ে। দেখি যে দোকান নিজের সব জিনিস গুছিয়ে রাখছিলো সে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। তার কাছে যেতে জিজ্ঞেস করলো কিছু খেয়েছি কি না। না বলা তে সে বললো যে তার ভাই এর জন্য রান্না করেছিল, বাস বন্ধ হয়েগেছে মানে সে আর রাতে আসতে পারবে না, তো আমি যদি শুধু রুটি আর ডাল খাই তো সে দিতে পারে। আমার জন্য তো সেটা অমৃত।
টাকা জিজ্ঞেস করতে সে মানা করলো যে এগুলো বিক্রির না, ভাইয়ের জন্য বানানো, সে এলোনা তো আমার ভাগ্যে লেখা। দু একবার আরো বললাম কিন্তু সে শুনলনা, রুটি ডাল আমার হাত এ ধরিয়ে নিজের বিছানায় চলে গেলো অন্ধকারে। খেলাম, তৃপ্তি করে, বোধহয় জীবনের একটি উত্তম রাতের খাবার সেদিন সেই ফুটপাথে খেয়েছি।
সকাল বেলা খবর পেলাম মা কে ছেড়ে দেবে, নিয়ে বাড়ি যাওয়া হলো আর তাতে প্রায় সারাদিন লেগে গেলো। এক সপ্তাহ পর গেলাম তো দোকান তা পেলাম না। শুনলাম পৌরসভা দোকান গুলো তুলে অন্য কোথাও বসিয়েছে। মনে হলো, সেদিন যে খাবার তা পেলাম, সেটা আমি তাকে হয়তো অনুভব করলাম যে আমাদের সবাইকার চোখের আড়ালে। আমি সেই অদৃশ্য কে দেখেছিলাম সেদিন।
Comments
Post a Comment